যুক্তির ব্যবহার আজকের ভিডিওর আলোচনার বিষয়। বিতর্ক এর নিয়মাবলী সহ ডিবেটের সকল নিয়েমাবলি নিয়ে আমাদের একটি সিরিজ “বিতর্কের সহজ পাঠ [ Simple Lesson In Debate ]” সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ।
যুক্তির ব্যবহার
বিতর্ক একটি প্রতিবাদের ভাষা । বিতর্ক ও বিতার্কিক সম্পর্কে জনপ্রিয় মন্তব্যের মাঝে একটি হলো- ‘ঝগড়া ছাড়া বিতর্ক কিছুই না আর বিতার্কিকরা কোনো কিছু পেলেই তর্ক করা শুরু করে।’ তবে আমার কাছে বিতর্ক একটি শিল্প, যা বিতার্কিকের মাঝে কখনো ডাইনেসিয়ান শিল্পের মতো আবার কখনো অ্যাপোলিনীয় শিল্পের মতো কাজ করে। এখানে ব্যক্তি সব কিছুর ঊর্ধ্বে যুক্তিকে আসীন করতে উন্মাদ আবার নিজের যুক্তির বাইরে অন্যান্য দৃষ্টিভঙ্গি অনুভব করার ব্যাপারে বিনয়ী।
একজন শিল্পী যেমন সমাজের সব অন্ধকারের বিরুদ্ধে তার শিল্পকে আলো হিসেবে দাঁড় করান, তেমনি বিতর্ক একটি প্রতিবাদের ভাষা- যা সব মিথ্যা এবং অযৌক্তিকতার বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার। সংসদ, সচিবালয় থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যে কোনো আলোচনায় নিজের মতের সঙ্গে অসংগতি পেলেই ব্যক্তিগত আক্রমণ, ভিন্ন প্রসঙ্গ এনে বহুরকম ফ্যালাসি তৈরি করা হয়। এরকম অসুস্থ পরিবেশ সংস্কারের জন্য দরকার যুক্তিবোধ যা বিতর্কের মাধ্যমে তৈরি হতে পারে।
বাংলা ভাষায় যে কোনো শব্দের পূর্বে প্রত্যয় যোগ হলে, শব্দটির বিশেষ অর্থ প্রকাশ পায়,? সে ক্ষেত্রে ‘বিতর্ক’ শব্দের পূর্বে ব্যবহৃত প্রত্যয় ‘বি’ একটি বিশেষ ধরনের তর্ককেই বুঝাচ্ছে বিতর্কের মাধ্যমে কোনো বিষয় বা কাজ করার যৌক্তিকতা খোঁজা হয়। এই বাকশিল্প শুধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় আর আন্তঃস্কুল বা কলেজের প্রতিযোগিতার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় বরং বিশ্ব রাজনীতির পটভূমি রচনায় প্রধান ভূমিকা পালন করছে।
বিতর্ক ২ হাজার বছর আগে থেকেই চলে আসছে, বর্তমান পৃথিবীতে তার গুরুত্ব আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বিতর্কের প্রসার সমাজকে গঠনমূলকভাবে এগিয়ে নেয়, সমাজের মানুষকে করে সহনশীল। অপরের ভালো যুক্তির সঙ্গে সহমত পোষণ করে একটা উন্নত সমাজ, রাষ্ট্র এবং পৃথিবী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বির্তকের মধ্যে দিয়েই জনপ্রতিনিধি হওয়ার ইচ্ছা পোষণকারী ব্যক্তিবর্গ তাদের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে- ইতোমধ্যে ২০২০ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে, মার্কিন টেলিভিশন বিতর্ক আয়োজন করা হয়। আর এই বিতর্কের বাস্তবিক চর্চার ফলেই, আজও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গণতন্ত্রের চর্চা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
মানুষ যখন কোনো একটা সমস্যা বা স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে বিতর্ক করে জেতার জন্য চেষ্টা করে, ঠিক সেই সময়টাতে তার নিজের অজান্তেই সে নিজেই ওই সমস্যার স্টেকহোল্ডার হিসেবে ভেবে নেয়। কারণ ভেতর থেকে কথা বা যুক্তি তখনই বের হয়, যখন নিজেকে ভুক্তভোগীর জায়গায় রাখা যায়। এভাবেই একজন বিতার্কিক, বিতর্ক চর্চার মধ্যে দিয়ে হয়ে উঠে সুনাগরিক এবং দেশপ্রেমিক।
যুক্তির ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও দেখুনঃ