আজকের আলোচনার বিষয়ঃ সংসদীয় বিতর্কের কাঠামো
সংসদীয় বিতর্কের কাঠামো
১. সংসদীয় বিতর্কে দুইটি দল অংশগ্রহণ করবে।
২. দল দুইটি সরকারি ও বিরোধী দল হিসেবে চিহ্নিত হবে।
৩. সরকারি এবং বিরোধী উভয় দলে তিনজন করে বিতার্কিক থাকবেন। তবে ২ (দুই) জনের সংসদীয় বিতর্কও অনুষ্ঠিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিয়ম সবই তিনজনের সাথে একই থাকবে, তবে বক্তার সম্বোধন হবে তিন জনের সংসদীয় বিতর্কের ১ম ও ৩য় বক্তার অনুরূপ।
৪. বিতার্কিকদের পরিচিতিঃ
ক. সরকারি দল-
- ১ম বক্তা – প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদনেতা
- ২য় বক্তা – মন্ত্রী/সরকার দলীয় হুইপ –
- ৩য় বক্তা – সরকার দলীয় সংসদ সদস্য
খ. বিরোধী দল-
- ১ম বক্তা – বিরোধী দলীয় নেতা
- ২য় বক্তা – বিরোধী দলীয় উপনেতা/বিরোধী দলীয় হুইপ
- ৩য় বক্তা – বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য
৫. বক্তব্য প্রদানের ক্রমটি নিম্নরূপ হবে-
- প্রধানমন্ত্রী
- বিরোধী দলীয় নেতা
- মন্ত্রী/সরকার দলীয় হুইপ
- বিরোধী দলীয় উপনেতা/বিরোধী দলীয় হুইপ
- সরকার দলীয় সংসদ সদস্য
- বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য
- বিরোধী দলীয় নেতা (যুক্তিখন্ডন)
- প্রধানমন্ত্রী (যুক্তিখন্ডন ও সমাপনী বক্তব্য)
৬. বিতর্ক দুইভাবে বিভক্ত। গঠনমূলক ও যুক্তিখন্ডন।
৭. একজন স্পীকার বিতর্ক পরিচালনা করবেন।
৮. বিতর্ক মঞ্চে স্পীকার ও দুই দলের বিতার্কিক ব্যতিত একজন সময় রক্ষক (স্পীকার এর ডান দিকে এবং আয়োজক কর্তৃক নির্ধারিত অনূর্ধ্ব দুইজন স্বেচ্ছাসেবক (স্পীকার এর বামদিকে) উপবেশন করবে।
৯. সময়সীমা সংক্রান্ত ধারাসমূহ-
ক. প্রধানমন্ত্রী তাঁর গঠনমূলক পর্বে উদ্বোধনী বক্তব্যে সময় পাবেন ৫ মিনিট। এক্ষেত্রে ৪ মিনিট শেষে সতর্ক সংকেত এবং ৫ মিনিট শেষে চূড়ান্ত সংকেত দেওয়া হবে।
খ. প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী ৫ জন বক্তা (সরকারী দলীয় হুইপ/মন্ত্রী ও সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবং বিরোধী দলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা বা হুইপ, বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য) প্রত্যেকে গঠনমূলক পর্বে ৫ মিনিট করে সময় পাবেন। এক্ষেত্রে ৪ মিনিট শেষে সতর্ক সংকেত এবং ৫ মিনিট শেষে চূড়ান্ত সংকেত বাজানো হবো।
গ. যুক্তিখন্ডন পর্বে বিরোধী দলীয় নেতা ৩ মিনিট সময় পাবেন। এক্ষেত্রে ২ মিনিট শেষে সতর্ক সংকেত এবং ৩ মিনিট শেষে চূড়ান্ত সংকেত দেওয়া হবে।
ঘ. প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা তাদের যুক্তিখন্ডন ও সমাপনী বক্তব্যের জন্য ৩ মিনিট সময় পাবেন। এক্ষেত্রে ২ মিনিট শেষে সতর্ক সংকেত এবং ৩ মিনিট শেষে চূড়ান্ত সংকেত দেওয়া হবে।
ঙ. প্রত্যেক বক্তাকে অবশ্যই তার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বক্তব্য শেষ করতে হবে।
১০. সংসদীয় ধারায় বিতর্কের মঞ্চ ও স্থানকে অধিবেশন কক্ষ বা হাউস বলে অভিহিত করতে হবে।
১১. সম্বোধন সংক্রান্ত ধারাসমূহ-
ক. বিতার্কিকগণ সংসদ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবেন তাই তাদের সম্বোধন করা হবে সংসদীয় রীতিতে।
খ. সরকার দলীয় সদস্যদের যথাক্রমে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’, ‘সম্মানিত মন্ত্ৰী মহোদয়’ বা ‘সম্মানিত হুইপ’ এবং ‘সম্মানিত হুইপ’ এবং ‘সম্মানিত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য’ রূপে সম্বোধন করা হবে।
গ. বিরোধী দলীয় সদস্যদের ‘সম্মানিত বিরোধী দলীয় নেতা’, ‘সম্মানিত বিরোধী দলীয় উপনেতা” বা ‘সম্মানিত বিরোধী দলীয় হুইপ’ এবং ‘সম্মানিত বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য’ রূপে সম্বোধন করতে হবে।
ঘ. বিতার্কিকগণ স্পীকারকে ‘জনাব/সম্মানিত/মাননীয় স্পীকার বলে সম্বোধন করে নিজ নিজ বক্তব্য পেশ করবেন।
ঙ. এছাড়াও অবমাননাকর নয় এমন যে কোন সম্বোধন স্পীকার ও উভয় দলের বিতার্কিকদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
চ. কোনক্রমেই স্পীকারকে ‘মহামান্য’ বলে সম্বোধন করা যাবে না।
১২. একাধিক (অনূর্ধ্ব তিনটি) বিষয়ের মধ্যে থেকে অংশগ্রহণকারী দলসমূহ বাছাই প্রক্রিয়ায় একটি বিতর্কের বিষয় নির্ধারণ করবে। বাছাই প্রক্রিয়াটি আয়োজকদের দ্বারা নির্ধারিত এবং পরিচালিত হবে।
১৩. ‘কয়েন টস’ এর মাধ্যমে সরকারি ও বিরোধী দল নির্বাচিত হবে।
১৪. বিষয় ও পক্ষ নির্ধারিত হবার ২০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে বিতর্ক অবশ্যই শুরু করতে হবে।
১৫. প্রস্তুতি গ্রহণের সময় বিতার্কিকরা তাদের প্রয়োজন মত বই, পত্রিকা এবং জার্নাল ব্যবহার করতে পারবেন।
সংসদীয় বিতর্কে চরিত্রায়ন [ Characterization In Debates ]ঃ
আরও দেখুনঃ